চরম বিপর্যয়ের মধ্যেও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সই ভরসা দিচ্ছে দেশকে ,রাখতে সাহায্য করছে সচল ,অর্থনীতির চাকা ।প্রায় ৪ মাস হতে চললো করোনা ভাইরাসের কারণে পুরো বিশ্বে সংকট দেখা দিয়েছে।চীন থেকে শুরু হলেও তার হাওয়া লেগেছে পুরো বিশ্বে।বাংলাদেশও এ থেকে রেহায় পায়নি।গত ১৭ ই মার্চ মুজিব শতবর্ষ উদযাপন এর কথা থাকলেও করোনা ভাইরাস এর কারণে তা আর পালন করা হয়নি।১৯শে মার্চ প্রথম শিবচর এলাকায় লকডাইন ঘোষণা করা হয়।তারপর আস্তে আস্তে পুরো দেশেকেই লকডাউন করে দেয়া হয়।২৫শে মার্চ জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরো দেশে ২৬ মার্চ থেকে লকডাউন ঘোষণা করেন।সেই থেকেই দেশে জরুরি সেবার আওতায় যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান এসেছে সেগুলো বাদে সব ধরনের ব্যাবসায়ীক কার্যক্রম বন্ধ আছে।এর মাঝে গার্মেন্টস খোলা হলেও তা আবার বন্ধ ঘোষণা করা হয়।এখন সীমিত আকারে গার্মেন্টস খোলা থাকলেও অর্থনীতিতে কতটুকু ভূমিকা রাখতে পারবে তা প্রশ্নবিদ্ধ।
এই বিপর্যয়ের মধ্যে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সই একটু স্বস্তি এনে দিয়েছে।পরিস্থিতি যখন খারাপ ছিলো তখন রেমিট্যান্স আসার পরিমাণ কিছুটা কমে গেলেও চলতি মাসে তা আবার স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।মে মাসের প্রথম দিন থেকে ১৪ দিনের মধ্যে রেমিট্যান্স আসে ৮০০ মিলিয়ন ডলার।এই মহামারীর মধ্যেও প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে। যখন পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকেই যাচ্ছে কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে কারোরই জানা নেই তখন প্রবাসীদের পাঠানো এই রেমিট্যান্স কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস দিচ্ছে।অপরদিকে দেশের অর্থনীতির চাকাও কিছুটা হলেও সচল রাখছে।২০১৯ সালের মে মাসে প্রথম ১৪ দিনে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স এর পরিমাণ ছিলো ৮৭১ মিলিয়ন ডলার।
আর এবার পুরো বিশ্বই যখন থমকে গিয়েছে তখনও পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে প্রবাসীরা প্রায় সমপরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন,আসন্ন ঈদের কারণেই ধার করে হলেও প্রবাসীরা প্রিয়জনদের জন্য অর্থের যোগান দিয়ে যাচ্ছে।চলতি অর্থবছরে গত ১৪ দিনের পাঠানো টাকা নিয়ে গত বছরের ১লা জুলাই থেকে ১৪ই মে পর্যন্ত ১০ মাস ১৪ দিনে পাঠানো রেমিট্যান্স এর পরিমাণ ১৫.৬৬ বিলিয়ন ডলার।এবার বছরের শুরু থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ভাইরাস এর প্রভাব পড়া শুরু হয়।চীনের উহান শহরে জানুয়ারির শুরুর দিকেই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়।যেহেতু চীন বিশ্ববাজারে শক্ত অবস্থান নিয়ে আছে তাই তার প্রভাব শুরু থেকেই বিশ্ব অর্থনীতির উপর পড়তে থাকে।বাংলাদেশের সাথেও চীনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকার কারণে বাংলাদেশেও তার প্রভাব পড়ে।কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনীতি কিছুটা হলেও ধরে রেখেছে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স।২ টি কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন সন্তোষজনক অবস্থায় আছে।একহলো প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দ্বিতীয় হলো আমদানি কমে যাওয়া।গতকাল দিনশেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ছিলো ৩২.৮৪ বিলিয়ন ডলার।সবশেষে স্বীকার করতেই হয় প্রবাসীরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে বলেই দেশের অর্থনীতি কিছুটা হলেও চাপমুক্ত আছে।