পেট ফোলার কারণ গুলো কী কী, জেনে নিনঃ১. নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন খাবার খেলে, অর্থাৎ খাবার যদি কেউ সদিচ্ছায় না খায়, মনোযোগ না দিয়ে খায় তখন পেট ফোলার সমস্যা টা দেখা দেয়। খাওয়ার সময় অন্যমনষ্ক হলে খাবার যথাযথ ভাবে আমাদের গায়ে লাগে না। তখন পেট ফোলার সমস্যা দেখা যায়।২. মন খারাপ থাকলেও মানুষের পেট ফুলতে পারে। কারণ মানুষের মনের স্বস্তির সাথে তার হরমোনের সম্পর্ক অনেক। মনের স্বস্তি না থাকলে তা দেহে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়। ফলে পেট ফুলে যায়।৩.কিছুদিন খাবার দাবারের ব্যাপারে উদাসীন থাকলেও পেট ফোলার সমস্যা দেখা যায়। যাদের গ্যাস্টিক জনিত সমস্যা আছে, তাদের পেটের উপরের অংশ সবসময় ফোলা থাকে।৪.অতিরিক্ত পরিমাণে ওষুধ সেবনের ফলে পেট ফোলার সমস্যা সৃষ্টি হয়।
শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক এর পরিমাণ বেশি মাত্রায় হয়ে গেলে তার প্রভাব পড়ে শরীরে। পেট ফোলার সমস্যার সৃষ্টি হয়।৫. একই যায়গায় বসে ৭ ঘন্টার বেশি কাজ করলে পেট ফুলে যায়। কারণ তখন শরীরের কোন ক্যালরি খরচ হয় না।৬.যাদের থাইরয়েডের সমস্যা আছে, তাদের পেটের উপরের অংশ ফুলে যায়। হরমোনের বিভিন্ন সমস্যার কারণেও পেটের উপরের অংশ ফোলা হয়ে থাকে।পেট ফোলা সমস্যার সমাধানঃখাবার খাওয়ার পরে পেট ফুলে ফেপে ওঠে অনেকের ই। নিয়মিত শরীরচর্চার পরেও দেখা যায়, তা ঠিক হচ্ছে না। বর্ধিত চাপ,অ’স্বস্তি, হজম সংক্রা’ন্ত পেশির নড়াচড়ায় সমস্যা হলেও পেট ফুলে ওঠে। পরিপাকতন্ত্রের এই ধীর গতি হয়ে যাবার জন্য দায়ী, আমরা প্রতিদিন যা খাচ্ছি তা এবং আমাদের কিছু স্বভাব।এই পেট ফুলে যাবার সমস্যা থেকে মু’ক্তি পাবার জন্য কিছু সহয উপায় আছে।
প্রতিদিন ৮-৯ গ্লাস পানি খেলে নিজেকে হাইড্রেটেড রাখা যায় এবং পেট ফোলা সমস্যা থেকে মু’ক্তি পাওয়া যায়।সোডা, কফি, চা, এলকোহল এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ এই পানিও গুলো গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল নালীর অস্বস্তির জন্য দায়ী। গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল নালীর অস্বস্তি রোধ করার মাধ্যমে পেট ফোলা সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়।ঘরোয়া উপায়ে বেকিং সোডা, লেবু আর পানির মিশ্রণ পাকস্থলীকে নিষ্ক্রিয় করে। ফলে এটি খেলেও পেট ফোলা সমস্যার সমাধান হয়। পিপারমিন্ট চা তলপেটের জমে থাকা গ্যাস কমাতে সাহায্য করে। তাই পেট ফোলা কমানোর জন্য এটি বেশ সহায়ক। এটি পান করলে গা গোলানোর সমস্যার ও নিরাময় হয়ে থাকে।খাবারের মধ্যে এলার্জি ও অস্বস্তিকর বাওয়েল মুভমেন্ট।
পেট ফোলা সমস্যা খাবারের এলার্জি থেকেও হয়ে থাকে। ল্যাক্টোজ, ফ্রাক্টজ,গ্লুটেন,গম,ডিম প্রভৃতি আমাদের পেটে অনিষ্ট ঘটায়। ডাক্টারের পরামর্শ নিয়ে ফুড এলার্জেন খুঁজে বের করতে হবে।বাওয়েল সিনড্রোমের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া, তলপেটে ব্যাথা এবং পেট ফুলে যায়। তাই এই ধরণের সমস্যার সময় দুগ্ধজাত পণ্য ও ফ্যাটি খাবার থেকে বিরত থাকতে হয়।প্রতিদিন যা অবশ্যই করতে হবে। আপনি যদি প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম না করে থাকেন,তবে আজ থেকেই শুরু করুন। কারণ নিয়মিত পেটের ব্যায়াম গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল নালীর জমে থাকা বাতাস বের করে দিয়ে পেটের চাপ কমায়।
অল্প অল্প করে দিনে ৫ বার খাবার খেতে হবে। বাস আরাম করতে হবে। ধীরেসুস্থে খাবার খেলে পাকস্থলীর উদগিরন আটকায়। ফলে পেট ফোলার সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়।যা একবারেই করা যাবে না।পেট ফোলার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে সুগার এলকোহল। এটি বেশি পরিমাণে খেলে পেট ফুলে ওঠে। সুগার-ফ্রি গাম বা খাদ্য, সুগার এলকোহল যুক্ত খাবার একদম এড়িয়ে চলতে হবে।মাল্টি-ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট খাওয়া যাবে না। কারণ এদের অনেক গুলোর ভেতরে ল্যাক্টোজ, গম বা সুগার এলকোহল থাকে যা খাবারের হজম প্রক্রিয়া ধীর করে দেয় ও পেটে গ্যাসের সৃষ্টি করে। প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেল পাবার জন্য নিয়মিত খাবার খেতে হবে।
সহজপাচ্য খাবার যার মধ্যে বাদাম বা রাইস প্রোটিন আছে, সেগুলো খেতে হবে।ল্যাক্টজে এলার্জি থাকলে প্রোটিন বার খাওয়া যাবে না। কারণ , এর মধ্যে উপস্থিত মিল্ক প্রোটিন এর ঘনত্ব পেট ফুলতে সাহায্য করে।কার্বোহাইড্রেট, লবণ এবং ফাইবার থেকে দূরে থাকতে হবে। বেশি কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার যেমন পাস্টা,বেগেল এবং লবণ দেওয়া প্যাকেটজাত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। জমে থাকা অতিরিক্ত ফ্লুয়িড বের করতে হবে। এবং এভাবে পেট ফোলা কমাতে হবে।ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরিমাণ কমাতে হবে। কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ের জন্যই এটি করতে হবে। কেননা, কোষ্ঠকাঠিন্য হলে পেটের খাবার হজম প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায়, যার ফলে পেট ফুলে যায়।
পেট ফোলা থেকে মু’ক্তি পেতে হলে সেদ্ধ সবজি খেতে হবে। টাটকা সবজি, শুকনো তুলসী, মৌরি, সেজের মতন ভেষজ দিয়ে পেট ফোলার হাত থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। কলা, পালংশাক, আলু, টমেটো, স্যালমান এবং পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার শরীরে জমা অতিরিক্ত পানি থেকে মু’ক্তি দেয়। তাই এই খাবার গুলো খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। যেন অতিরিক্ত পানির হাত থেকে র’ক্ষা পেয়ে পেট ফোলা সমস্যা থেকে মু’ক্তি পাওয়া যায়।উপরের সবগুলো কথা যথেষ্ট কার্যকরী। তবে এগুলো মানার পরেও যদি আপনার সমস্যা একই রকম থাকে, তবে নিশ্চিতভাবে সঠিক চিকিৎসার জন্য ভালো ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।