এন্টিবায়োটিক এর সাথে আমরা কম বেশি প্রায় সকলেই পরিচিত। এন্টিবায়োটিক হলো এমন এক প্রকার ওষুধ যা ব্যাকটেরিয়া সংক্র’মণ থেকে আমাদের দেহকে বাঁঁচিয়ে রাখে। এন্টিবায়োটিক হলো এমন এক প্রকার উপাদান যা ফাঙ্গাস বা ব্যাকটেরিয়া থেকে সংগ্রহ করে অন্য ক্ষতি’কর ফাঙ্গাস বা ব্যাকটেরিয়া কে ধ্বংস করার জন্য ব্যবহৃত হয়।আমাদের দেশে এন্টিবায়োটিক এর যথেচ্ছ ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। সর্দি, কাশি, জ্বরের মতো সাধারণ যে কোনো রোগেই আমরা অনেকেই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এন্টিবায়োটিক সেবন করে ফেলি। যা মারা’ত্মক ক্ষতিকর। জীবন রক্ষাকারী ওষুধের ব্যবহার হতে হবে সীমিত, পরিমিত ও জরুরি প্রয়োজনে।বিশেষজ্ঞদের গবেষণায় ইতোমধ্যে দেখা গেছে বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে “এন্টিবায়োটিক রোধী” ক্ষমতা তৈরি হয়ে গেছে।
সাধারণত চিকিৎসকেরা একজন রোগীর অবস্থার ভিত্তিতে তাকে ৫ থেকে ৭ দিনের এন্টিবায়োটিক কোর্স দিয়ে থাকেন। কিন্তু কেউ যদি সেই কোর্স সম্পূর্ণ না করে যেমন ধরুন ২ দিন খেয়ে আর খেলো না তখন সেই এন্টিবায়োটিক রোগীর শরীরে অকার্যকর হয়ে পড়ে। তখন ঐ রোগীর জন্য আগের চেয়ে আরো অধিক মাত্রার এন্টিবায়োটিক এর প্রয়োজন হয়। মানবদেহে এন্টিবায়োটিক এর অধিক ব্যবহার ও কোর্স অসম্পূর্ণ রাখার ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। আসুন জেনে নেই ক্ষতি’কর প্রভাব গুলো।
শরীর দূর্বল হয়ে পড়ে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে যায়। যেকোনো রোগে খুব সহজেই আক্রা’ন্ত হবার শঙ্কা ও সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এন্টিবায়োটিক এর যথেচ্ছ ব্যবহার এর ফলে লিভারে সমস্যা দেখা দিতে পারে। লিভারের ক্ষতি সাধনের জন্য অন্যান্য ওষুধের তুলনায় এন্টিবায়োটিক বেশি ভূমিকা রাখে।এন্টিবায়োটিক আমাদের শরীরের এজমা থেকে রক্ষাকারী ব্যাকটেরিয়া নির্মূল করতে সক্ষম। সে কারনে এজমা হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এন্টিবায়োটিক এর অতিরিক্ত ও অপব্যবহার এর কারনে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে শারীরিক স্থূলতার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এন্টিবায়োটিক এর যথেচ্ছ ব্যবহার এর কারনে পেটের প্রদাহ হতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী এন্টিবায়োটিক এর ব্যবহার এর ফলে অন্ত্রের প্রাচীরে ঘা সৃষ্টি হতে পারে।এন্টিবায়োটিক অন্ত্রের অনেক উপকারী ব্যাকটেরিয়াদেরো ধ্বংস করে ফেলে যার কারনে অগ্নাশয়ের কার্যক্ষমতা কমে গিয়ে ডায়াবেটিস এ আক্রা’ন্ত হবার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।প্রয়োজনের অতিরিক্ত ও অসম্পূর্ণ মাত্রায় এন্টিবায়োটিক সেবন করলে শরীরের ক্ষতি’কর জীবাণু তার নিজের শরীরের জেনেটিক কোড পরিবর্তন করে ফেলে। যার ফলে পরবর্তীতে এন্টিবায়োটিক জীবাণুর ক্ষতি করতে অক্ষম হয়ে পরে৷ এন্টিবায়োটিক এর ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে হলে আমাদের উচিৎ। ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত সাধারণ রোগে ভুগলেই এন্টিবায়োটিক সেবন থেকে বিরত থাকতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক ডোজ ও সময় অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক সেবন করতে হবে।মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সেবন বর্জন করতে হবে।