গ্যাস্ট্রিক সমস্যা থেকে বাঁচতে যা করবেন আর যা করবেন না জেনে নিন । এমন কোনো লোক নেই যে সে গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যায় ভোগেন না। গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটি সমস্যা বলতে গেলে সবার কাছে একটি সাধারণ রোগ মনে হয়। বেশিরভাগ মানুষই এই রোগ কে কোনো পাত্তা দেন না, সেকারনে চিকিৎসাও নেন না।
বাজারে যে সকল সাধারন অমিপ্রাাজল জাতীয় ওষুধ পাওয়া যায় সেগুলোর ওপরই নির্ভর করেই এই সমস্যা নিয়ে দিনাতিপাত করে যাচ্ছেন। আমরা বেশিরভাগ মানুষই জানিনা যে এই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কে অবহেলা করলে অনেক বড় শারীরিক ক্ষ’তির সম্ভাবনা থাকে।
গ্যাস্ট্রিক আসলে মানুষের মুকে বলা রোগের নাম। এটি আসলে গ্যাস্ট্রিক এসিড সংক্রান্ত জটিলতার কারনে সৃষ্টি হয়। গ্যাস্ট্রিক সংক্রা’মক ডায়রিয়া নামেও পরিচিত।
এটি “গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টের” প্রদাহ যা পাকস্থলী ও ক্ষুদ্রান্তের সাথে জড়িত। স্টোমাক থেকে “হাইড্রোক্লোরিক এসিড” নামে এক প্রকার এসিড তৈরি হয়। এই তরল এসিড খাবার হজমে সহায়তা করে। এসিডের কিছু অংশ গ্যাস আকারে স্টোমাকের উপরের দিকে থাকে। কোনো কোনো সময় এই গ্যাস অতি’রিক্ত মাত্রায় খাদ্যনালীতে প্রবেশ করে। তখন যে অস্বস্তি যেমন: বুক জ্বালা, ঢেকুর, পেটে ব্যাথা, বমি বমি ভাব আমরা অনুভব করি সেটাই গ্যাসের সমস্যা বা গ্যাস্ট্রিক। ভাইরাস, ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া, পরজীবী দ্বারা গ্যাস্ট্রিক সংক্র’মণ হতে পারে।
গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটি কে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় “পেপটিক আলসার”। এই সমস্যা থেকে পাকস্থলীতে হালকা থেকে অনেক গভীর সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। বিভিন্ন কারনে আমাদের গ্যাসের সমস্যা হতে পারে।খাওয়া দাওয়ায় অনিয়ম, অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহন, অধিক তেলযুক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার গ্রহন, শারীরিক পরিশ্রম না করা, পানি কম পান করা ইত্যাদি গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টির জন্য উল্লেখযোগ্য কারন।
আমরা অনেক বেশি ওষুধের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি। সারা বছর দেশে যে পরিমাণ গ্যাসের ওষুধ বিক্রি হয় অন্য সকল রোগের সব ওষুধ মিলেও সে পরিমাণ হয় না। প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা নিজেরা ই পারি কিছু নিয়ম কানুন, খাদ্যাভ্যাস ও ঘরোয়া পদ্ধতিতে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করতে। আসুন সেগুলো জেনে নেওয়া যাক ।
সারাদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। পূর্ণ বয়স্ক ব্যক্তিদের দৈনিক ২ থেকে ৩ লিটার বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। বাইরের অস্বাস্থ্যকর ও অধিক তেলযুক্ত ভাজাপোড়া খাবার অবশ্যই বর্জন করতে হবে। বেশি বেশি শাক সবজি ও তাজা ফলমূল খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। দৈনিক ১ অথবা ২ চা চামচ টক দই খেতে হবে। দই এ ল্যাকটোব্যাসিলাস নামক এক প্রকার উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে। যা খাবার হজমে সহায়তা করে। তাই খাবার খাওয়ার পরে দই খাওয়া ভালো। আদা কুচি করে লবণ দিয়ে খান। অ্যান্টিইনফ্লেমেন্টরি উপাদান সম্মৃদ্ধ খাবার হলো আদা। এই উপাদান গ্যাসের সমস্যা, বুক জ্বালা পোড়া, হজমের সমস্যা ইত্যাদি দূর করে।
কাঁচা ও পাকা উভয় প্রকার পেঁপে খান। গ্যাসের সমস্যা দূর হবেই। শসাতে আছে প্রচুর পরিমাণ সিলিকা ও ভিটামিন সি। শসা হজমে সহায়তা করে এবং এর ফ্লেভানয়েড উপাদান পেটে গ্যাসের উদ্রেক কমায়। যারা বেশি বেশি লবণ খান তাদের গ্যাস ও হজমে সমস্যা হতে পারে। লবণ বেশি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। বেশি বেশি পাকা কলা খেতে পারেন। পাকা কলা দেহ থেকে দূষিত উপাদান শোধন করে দেয়। হজমে সহায়তা করে। গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যা কে অবহেলা না করে এই সমস্যা সমাধানে তৎপর হোন অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবার আগেই।