থাইরয়েড কিভাবে নিয়ন্ত্রনে রাখবেন সেটা জানা অনেক জরুরি ,যেহেতু আমাদের দেশের অনেকেরই থাইরয়েড আছে এবং এতে আ’ক্রান্ত হবার ঝুঁকি ও বেশি । থাইরয়েড হলো আমাদের একটি গ্রন্থি যা আমাদের গলার সামনের দিকে অবস্থিত।এই গ্রন্থি থেকে কিছু প্রয়োজনীয় হরমোন নিঃসৃত হয়।বর্তমানে ডায়াবেটিস এর মতো থাইরয়েড একটি জটিল রোগ।থাইরয়েড সাধারণত নারীদের হয়ে থাকে।আমাদের আশেপাশে প্রতি ৮ জন নারীর একজন থাইরয়েড সমস্যায় আক্রান্ত। ছোট বালিকা থেকে শুরু করে বয়স্ক নারী যে কেউ যেকোনো সময় হাইপো থাইরয়েড সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারে।সবসময় যে গলগন্ড হবে বা গলার গ্লযন্ড ফুলবে তা নয়। দেখা যায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হাইপো থাইরয়েড বা থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি খুব সামান্য উপসর্গ নিয়ে ধরা পড়ে। কখনো কখনো কোনো উপসর্গ থাকে না।
ডাঃ তানজিনা হোসেন, হরমোন ও ডায়াবাটিস বিশেষজ্ঞ থাইরয়েডের কিছু লক্ষন উল্লেখ করেছেন।হাইপো থাইরয়েড এর লক্ষণ সমূহঃ১. হাইপো থাইরয়েড এর কিছু লক্ষণ নারীরা প্রায়ই খেয়াল করে না। যেমন ব্যাখ্যা করা যায় না এমন ক্লান্তি বা অবসাদ, অল্পতে পরিশ্রান্ত বোধ করার অনুভূতি হতে পারে।২. শরীরের পেশিতে কোনো কারণ ছাড়াই ব্যথা, ম্যাজমেজে ভাব অনুভব হতে পারে। কখনো সকালে ঘুম থেকে জেগে মনে হতে পারে মুখটা ফুলা, পায়ে মাঝে মাঝে পানি ও আসতে পারে।৩. ওজন বাড়তে থাকা ও চেষ্টা সত্ত্বেও ওজন নিয়ন্ত্রন করতে না পারা হাইপোথাইরয়েড এর অন্যতম একটি লক্ষণ।৪. রুটিন পরীক্ষায় নারীদের রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত পাওয়া গেলে থাইরয়েড হরমোন পরীক্ষা করার কথা নির্দেশিত আছে। টাইপ টু ডায়াবেটিস এবং রক্তশূন্যতায় আক্রান্ত নারীদের রুটিন থাইরয়েড পরীক্ষা করা উচিত।৫.অনিয়মিত মাসিক, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, বন্ধ্যাত্ব, গর্ভপাত হয়ে যাওয়া।
৬. স্রেফ কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে থাইরয়েড ঘাটতির একটি বিশেষ উপসর্গ।৭. শুষ্ক ত্বক, অতিরিক্ত চুল পড়া ও ত্বকের নানা সমস্যায় থাইরয়েড হরমোন পরীক্ষা করার প্রয়োজন হতে পারে। ৮.মধ্য বয়স্ক বা বয়স্ক নারীদের ভুলে যাওয়ার প্রবণতা, মনোযোগ না থাকাও ডিমেনশিয়া কে অনেক সময় উপেক্ষা করা হয়। কিন্তু গবেষণা বলছে, শুধু এই উপসর্গ নিয়ে একটা বড় অংশের হাইপো থাইরয়েড রোগীর রোগ শনাক্ত হয়।৯. সবচেয়ে বেশি অবহেলিত উপসর্গ হলো ব্যাখ্যাতীত বিষণ্ণতা, খিটখিটে মেজাজ, অতিরিক্ত আবেগ প্রবণতা। থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণের ঘরোয়া চারটি উপায়ঃ ১. আয়োডিনযুক্ত খাবার থাইরয়েড সমস্যা কমাতে কার্যকর। আয়োডিনযুক্ত লবণ দিয়ে খাবার রান্না করে খাওয়া যেতে পারে।এছাড়া কলা, গাজর, স্ট্রবেরী, দুধ, সামুদ্রিক মাছ, শাক পাতা ও মৌসুমীর সবজিতে যথেষ্ট পরিমাণে আয়োডিন রয়েছে।২. থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য প্রোটিন খুবই জরুরী। প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় প্রোটিন থাকতে হবে।চিজ,পনির,ডিম, মুরগির মাংস পরিমিত খেলে থাইরয়েড গ্ল্যান্ড ঠিকমতো কাজ করবে।
৩.থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে রাতে পর্যাপ্ত ঘুম খুবই জরুরী। রাতে ঘুমের সঙ্গে কোন আপোস করা যাবে না। রাতে ঘুমাতে না পারলে দিনের বেলা পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম হয় তাহলে ক্ষতি নেই।৪.থাইরয়েড সমস্যা থাকলে সঠিকভাবে ডায়েটের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিন নিয়ম করে শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করা দরকার। সাইকেল চালানো বা সাতার থাইরয়েড সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।আসুন আমরা থাইরয়েড সম্পর্কে আরো ভালো ভাবে জানি।