বাবা মেয়ের যুগলবন্দী প্রশংসায় ভাসালেন মাইক্রোসফট এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস হেডলাইন দেখেই প্রত্যেকটা মানুষ হয়তো বুঝতে পেরেছেন কাদের কথা বলছি।বলছিলাম ডঃ সমীর কুমার সাহা ও তার মেয়ে সেঁজুতি সাহার কথা।উন্নত বিশ্বের বিজ্ঞানীরা যখন করোনাভাইরাস তার চরিত্র বা জিনোম পাল্টায় এ নিয়ে গবেষণায় মত্ত ঠিক সেই সময়টাতে বাংলাদেশের চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ডঃ সমীর কুমার সাহা ও তার মেয়ে সেঁজুতি সাহার নেতৃত্বে ৮ সদস্যের গবেষক দল জিনোম সিকোয়েন্সের রহস্য উদঘাটন করে পুরো বিশ্বে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।ডঃ সমীর কুমার সাহা ও সেঁজুতি সাহার নেতৃত্বে চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন প্রথম জিনোম সিকোয়েন্সের রহস্য উদঘাটন নিয়ে কাজ শুরু করে।ডঃ সমীর কুমার সাহা চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আর তার যোগ্য উত্তরসূরী,তার মেয়ে সেঁজুতি সাহা ঢাকা শিশু হাসপাতালের চাইল্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশনের গবেষক।বাবা মেয়ে যৌথভাবে এই কৃতিত্ব অর্জন করেছেন আর তা জানা গিয়েছে সিএইচআরএফের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে।
আর এই কৃতিত্বের কথা যে বাংলাদেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছে তা না তাদের এই কৃতিত্বের জন্য তাদের প্রসংশায় ভাসিয়েছেন স্বয়ং মাইক্রোসফট এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস নিজে।গেটস নোটস ডটকম নামের তার ব্লগে তিনি লিখেন বাবা মেয়ে দুজন আবারো প্রমাণ করলেন তারা সেরা।গত মঙ্গলবার কাউন্টার পাঞ্চ অনলাইনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।টেকডননেট গত বুধবারে এ নিয়ে বিশেষ রিপোর্ট ও প্রকাশ করেন।বাংলাদেশ চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন থেকে জিনোম সিকোয়েন্সের রহস্য উদঘাটন করে জার্মানির গ্লোবাল ইনিসিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটার কাছে তথ্য জমা দেওয়া হয়।বিল গেটস আরো বলেন আমি সবসময় তাদের পাশে আছি।তারা সারা বিশ্বের মানুষের কল্যাণের লক্ষ্যে কাজ চালয়ি যাচ্ছেন।এর আগেও ডঃ সমীর কুমার সাহা ও তার মেয়ে সেঁজুতি সাহা চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন এর মাধ্যমে শিশুদের টিকাদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।নিউমোনিয়া ফুসফুসের প্রদাহজনিত রোগ।নিউমোনিয়া ও মেনিনজাইটিস রোগের জীবাণু নিউমোকক্কাস।নিউমোনিয়া ও মেনিনজাইটিস কোন ধরনের নিউমোকক্কাস দ্বারা হয় তা নিয়ে গবেষণা করেছিলেন সমীর সাহা ও তার দল।
২০ বছরের গবেষণার পর সফল ও হয়েছিলেন তিনি। শুধু তাই নয় এসব ভ্যাকসিন যেনো বাংলাদেশের মানুষ বিনা মূল্যে পায় তা নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টেও বক্তব্য দিয়েছিলেন তিনি।তার জন্য প্রশংসাও কুড়িয়ে ছিলেন তিনি।ইউনেস্কো এই প্রসঙ্গে বলেছিলেন সমীর কুমার সাহার এই কাজ বাংলাদেশের শিশুস্বাস্থ্য পরিস্থিতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।২০১৫ সালে তার হাত ধরেই নিউমোকক্কাস ভ্যাকসিনের যাত্রা শুরু হয়।এই প্রসঙ্গেও চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বিল গেটস বাবা মেয়ের প্রশংসা করেন। গেটস নোটস ডটকম এ তিনি লিখেন শিশুদের বড় দুই ঘাতক মেনিনজাইটিস ও নিউমোনিয়ার টিকা ব্যবহারে বাংলাদেশেকে সহায়তা করেছেন সমীর কুমার।এ টিকা পেয়ে বাংলাদেশের পাশাপাশি আমরাও উপকৃত হয়েছি।স্বল্পোন্নত ও সম্পদশালী দেশগুলোর মধ্যাকার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবধান কমানোর লক্ষ্যে তারা কাজ করে চলেছেন।
ইউনেস্কোর কার্লোস জে. ফিনলে পুরস্কার পেয়েছিলেন এই অণুজীব বিজ্ঞানী। ২০১৭ সালের ৬ নভেম্বর প্যারিসে ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলনের ৩৯ তম অধিবেশনে এই পুরষ্কার পান তিনি।শুধু জে. ফিনলে পুরস্কার না ক্লিনিক্যাল মাইক্রোবায়োলজিতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য ২০১৭ সালেই আমেরিকান সোসাইটি অব মাইক্রোবায়োলজি পুরষ্কার ও অর্জন করেছিলেন ডঃ সমীর কুমার সাহা ।করোনার জিনোম সিকোয়েন্স আবিষ্কার করে অনেক এগিয়ে গিয়েছেন ডঃ সমীর কুমার সাহা ও সেঁজুতি সাহা।বাবা মেয়ের যুগলবন্দী প্রশংসায় এই কৃতিত্ব সত্যি প্রশংসার দাবিদার। বাবা মেয়ের এই যুগলবন্দী ভবিষ্যতে আমাদের আরো অনেক ভালো কিছু দেবে সেই প্রত্যাশা রইলো।