শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় নামাজ। আল্লাহ তাআলা তার মুসলিম বান্দাদের উপর দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন।আর এই নামাজের মাধ্যমেই মুসলিমরা আল্লাহর কাছে নিজেকে সমর্পণ করেন।নামাজ আদায় করলে যেমন আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায় তেমনি এর ফলে শরীর পবিত্র,শুদ্ধ ও কর্মচঞ্চল হয়।নামাজ আদায় করার জন্য ওজু করে নেয়ার বিধান রয়েছে।আর সে ওজুর পানি নোংরা হলে হবেনা পানি হতে হবে পরিষ্কার,পরিচ্ছন্ন।আর এভাবে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় কালে পরিষ্কার পানি দিয়ে নাক,মুখ,হাত,পা ধুয়ে নেয়ার ফলে আমাদের শরীর থেকে ধূলো,বালি,ময়লা এবং জীবাণু দূর হয়।ফলে আমাদের শরীর সুস্থ থাকে।
নামাজকে বলা হয় শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সর্বোত্তম শরীরচর্চা ও যোগ ব্যায়াম।দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে ফরজ মোট ১৭ রাকাত,সুন্নাত ও নফল সহ তা ৪৬ রাকাত দাড়ায়।নামাজ আদায় কালে এই ৪৬ বার বিভিন্ন অঙ্গ ভঙ্গিতে নির্দিষ্ট সময় নিয়ে দাড়াতে ও বসতে হয়।আর নামাজে দাড়ানো,বসা,রুকু,সিজদা,সালাম ফিরানো প্রভৃতিতে প্রায় ৭ থেকে ৮ রকমের অঙ্গ ভঙ্গি করা হয়।যা শরীরের জন্য ভালো একটি ব্যায়াম।নামাজ আদায় করলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।একজন মুসলিম দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করলে তার শরীরের একটি ব্যায়াম হয়।
ডা.সাঈদ এনাম এক হিসেবে দেখিয়েছিলেন কোন ব্যাক্তি যদি ২ রাকাত নামাজ আদায় করে থাকেন তাহলে তিনি ১৪ বার বিভিন্ন শারীরিক বিন্যাসে থেকে নামাজ আদায় করেন।তাও নামাজ আদায় করতে হয় একাগ্রচিত্তে।সে হিসেবে প্রতিদিন ১১৯ বার,মাসে ৩৭৫০ বার এবং বছরে ৪২ হাজার ৮৪০ বার বিভিন্ন শারীরিক অঙ্গ বিন্যাসে নামাজ আদায় করে।আর এই ভিন্ন শারীরিক অঙ্গ বিন্যাস প্রাকৃতিক ভাবে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।নামাজ আদায় কালে একজন ব্যাক্তির ৮০ কিলো ক্যালরি শক্তি ব্যায় হয়।তাছাড়া সিজদারত অবস্থায় ফুসফুস দেহের জন্য র’ক্তের সাথে প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের সমন্বয় ঘটাতে পারে।
এই অবস্থায় র’ক্তে অক্সিজেন সেচুরেশন বৃদ্ধি পায়।যখন কোনো রোগীর র’ক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায়, তখন রোগীকে অনেকটা সিজদারত অবস্থায় রাখা হয়।আর এই সিস্টেমকে বলা হয় প্রোনিং সিস্টেম।এছাড়াও নামাজের বৈজ্ঞানিক অনেক উপকারিতা রয়েছে।মানুষ যখন নামাজে দাড়ায় তখন তার দৃষ্টি কেন্দ্রতে থাকে যা স্মৃতিশক্তি প্রখর করে।রুকু থেকে যখন সোজা হয়ে দাড়ায় তখন কোমর ও হাটুর ভারসাম্য বজায় থাকে এবং র’ক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়।শুধু তাই নয় যখন সিজদায় যায় তখন মস্তিষ্কে দ্রুত র’ক্ত প্রবাহিত হয়।ফজরের সময় নামাজ আদায় করলে সারারাত ঘুমের পরে হালকা শরীরচর্চা হয়ে যায়।যা আমাদের শরীরের জন্য উপকারী।আর সকাল বেলা আমাদের পাকস্থলী খালি থাকে ওই অবস্থায় ভারি অনুশীলন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।যোহরের সময় কর্মব্যস্ত মানুষ যে ধূলো,বালি,ও সূর্যের আলোতে কাজ করে এবং সূর্যের আলো ঢলে পড়ার সময় যে বিষাক্ত গ্যাস বের হয় তা থেকে মুক্তি মেলে ওজু করার ফলেই।
আসরের সময় নামাজ আদায় করলে অস্থিরতা ও মানসিক চাপ কমে।কারণ আসরের সময় পৃথিবীর ঘূর্ণন কমতে থাকে ফলে অতিরিক্ত অবসাদগ্রস্ততা ও অবচেতন অনুভূতির সৃষ্টি হয়।যা থেকে মুক্তি দেয় আসরের নামাজ।মাগরিবের নামাজ সারাদিন কাজ করার পর আত্মিক ও দৈহিক শান্তি দেয়।এশার নামাজ রাতে ঘুমোনোর আগে হালকা শরীরচর্চার কাজ করে।বিশেষজ্ঞরা বলে হালকা ব্যায়াম করে বিছানায় যাওয়ার কোন ক্ষতিকর দিক নেই।মোট কথা নামাজ আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।মনকে শান্ত রাখে,বিভিন্ন অন্যায়,অবিচার থেকে দূরে রাখে।