বিয়ের পর মুসলিম নারীদের স্বামীর পদবি ব্যবহার করা নিয়ে ইসলামের নির্দেশ।একটি মেয়ের জন্মের পর অনেক সখ করেই তার বাবা মা নাম রেখে থাকেন।সন্তানের নামকরণ করা পিতামাতার দায়িত্বও।সন্তানের যখন নামকরণ করা হয় তখন তার বাবার পদবিই সন্তানরা ব্যাবহার করে।কিন্তু বিয়ের পর অনেক মেয়ের বাবার নামের পদবি পরিবর্তন করে স্বামীর নামের পদবি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।স্বামীর পদবি ব্যবহার করার বিষয়টি ১৯২০ সাল থেকে চালু হয়।২০০৯ সালের এক গবেষণায় দেখা যায় ৭১ শতাংশ লোক মনে করেন বিয়ের পর মেয়েদের পদবি বদল করে ফেলাই উচিত।আবার ওই ৭১ শতাংশের অর্ধেক লোক মনে করেন এর আইনি বাধ্যবাধকতাও থাকা উচিত।হিন্দু সম্প্রদায়ে একটি মেয়ে বিয়ের পর তার স্বামীর পদবি ব্যবহার করে এটা তাদের নিয়মই বলা চলে।কিন্তু ইসলাম সম্পুর্ন ভিন্ন কথা বলে।ইসলামে একজন নারী তার স্বামীর পদবি তার নামের শেষে যুক্ত করতে পারবেনা।ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টি মোতাবেক মুসলিম নারীদের বিয়ের পরও তার পিতার দেয়া নাম ঠিক রাখা উচিত।
আর এই পিতার দেওয়া নাম ঠিক রাখার ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে বলা আছে, “তোমরা তাদেরকে তাদের বাবার নামে ডাকো।”(সূরা আহজাব,আয়াত নাম্বার ৫)।রোজ হাশরের ময়দানে প্রত্যেক মানুষকে তার পিতার দেওয়া নামে ডাকা হবে।হযরত আবু দারদা (রঃ) হতে বর্ণিত, ‘রাসূল (সঃ) বলেছেন,কিয়ামতের দিন তোমাদের ডাকা হবে তোমাদের নামে এবং তোমাদের পিতার নামে অতএব তোমাদের নাম গুলো সুন্দর করে রাখো।'(আবু দাউদ,বায়হাকি ও মুসনাদে আহমদ)।হাদিস শরিফে পিতার নামের পরিবর্তে অন্য নামে ডাকা আল্লাহ ও তার রাসূল (সঃ) এর লা’নত বলে অভিহিত করা হয়েছে।এ বিষয়ে রাসূল (সঃ) বলেছেন, ‘যে কেউ নিজেকে বাবার নাম ছাড়া অন্য নামে ডাকবে তার ওপর আল্লাহ,ফিরিশতা ও সমগ্র মানুষের লা’নত বর্ষিত হবে।’অন্য আরেকটি হাদিসে মহানবী (সঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যাক্তি জেনে শুনে নিজেকে নিজের পিতা ছাড়া অন্যের সাথে সংযুক্ত করে,তার জন্য জান্নাত হারাম।'(ইবনে মাজাহ)।হযরত আব্দুল্লাহ ইবন আমর(রঃ) হতে বর্ণিত,মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) বলেছেন, ‘যে কেউ নিজের বাবা ব্যাতিত অন্যের পরিচয়ে পরিচয় দেয় সে জান্নাতের গন্ধও পাবেনা।যদিও জান্নাতের সুঘ্রাণ সত্তর বছর হাঁটার রাস্তার দূরত্ব থেকেও পাওয়া যাবে।'(মুসনাদে আহমদ)
স্বামী যদি তার স্ত্রীকে তার নামের উপাধি ব্যাবহার করতে বলে না স্ত্রী যদি স্বেচ্ছায় তা গ্রহণ করার কথা বলে তাহলে স্ত্রী তার স্বামীর বংশীয় হয়ে যায় যা হারাম।সহীহ বোখারি তে এসেছে, ‘যে ব্যাক্তি নিজেকে এমন বংশের সাথে সম্পৃক্ত দাবি করলো, যে বংশের সাথে তার কোনো বংশগত সম্পর্ক নেই।সে যেনো তার ঠিকানা জাহান্নামে করে নেয়।’হাশরের ময়দানে যখন কাউকে ডাকা হবে তখন তার পিতার নামেই ডাকা হবে।যদি কোনো নারী তার স্বামীর পদবি ব্যবহার করে তখন সে তার স্বামীর উত্তরসূরীর পর্যায়ে পড়ে যায় নাউজুবিল্লাহ।তাই বিয়ের পর মেয়েদের পিতার পদবিই ব্যবহার করা উচিত।