কুফরি কালাম ও যাদু টোনা নিয়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি।কিছু মানুষ আছেন যারা যাদু ও কুফরি করে থাকেন।কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিতে তা ক’বিরা গুনাহ।যাদু ও কুফরি কালাম মানব সভ্যতা শুরু থেকেই চলে আসছে।কোরআনে বিভিন্ন জায়গায় যাদু সম্পর্কে বলা আছে।অধিকাংশ আয়াতে বলা আছে কোনো নবি যখন কওমের কাছে ইসলামের দাওয়াত নিয়ে গেছে,তখন তারা নবী করিম (সঃ) যাদুকর বলে অপবাদ দিয়েছেন।সূরা যারিয়াতের ৫৬ নম্বর আয়াতে উল্লেখ আছে “এমনিভাবে তাদের পূর্ববর্তীদের কাছে যখনই কোনো রাসূল এসেছে তারা বলেছে যাদুকর,না হয় উম্মাদ।
সূরা হিজর এর ১৫ নম্বরের আয়াতে বলা হয়েছে “যদি আমি ওদের সামনে আকাশের কোন দরজাও খুলে দেই আর তাতে ওরা দিনভর আরোহনও করতে থাকে।তবুও ওরা একথাই বলবে যে,আমাদের চোখ ভুল দেখছে?না আমরা যাদু আক্রান্ত হয়ে পড়েছি।”যাদু একটি ঘৃণিত শাস্ত্র,একে অভিশপ্ত শাস্ত্রও বলা হয়।যাদু দ্বারা মানুষের ক্ষতি সাধন করা হয়।আমাদের নবী করিম (সঃ) এর ওপরও যাদু করা ও বান মারা হয়েছিলো।এতে করে তিনি অনেক অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।তখন আল্লাহ তায়ালা নবী করিম (সঃ) কে যাদু টোনার হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য একটি দোয়া শিখিয়ে দিয়েছিলেন।দোয়াটি হলো।
বলুন,আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি প্রভাতের পালনকর্তার,তিনি যা সৃষ্টি করেছেন,তার অনিষ্ট থেকে,আর অন্ধকার রাত্রির অনিষ্ট থেকে,যখন তা সমাগত হয়,এবং গ্রন্থিতে ফুঁৎকার দিয়ে যাদুকারিনীদের অনিষ্ট থেকে”(সূরা ফালাক,আয়াত ১-৪)।মানুষের ক্ষতি সাধনের লক্ষ্যে অদৃশ্য বিষয়বস্তুর সহায়তা যেমন জ্বিন-শয়তান,গ্রহ-নক্ষত্র,কুফরি,শিরকি,মিথ্যাচার ও পাপাচারের আশ্রয় নেয়।এটাই যাদু নামে প্রচলিত।ইসলামী শরিয়তের বিধান অনুযায়ী যাদু করা হারাম।আর যাদুকে বৈধ বা হালাল পন্থা হিসেবে অবলম্বন করা কুফরি।
হাদিসের বর্ণনায় বলা হয়েছে,যে ব্যাক্তি গণক বা জ্যোতিষের কাছে গিয়ে নিজের ভবিষ্যৎ জানতে চায়,তার চল্লিশ দিন পর্যন্ত নামাজ কবুল হয়না।ইসলামের দৃষ্টিতে যাদু একটি নিষিদ্ধ কাজ।কিছু হাদিসে যাদু সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।সেগুলো সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।আবু বাকর ইবন আবি শায়বা (রঃ) সা’দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন।তিনি বলেন,আমি রাসুলুল্লাহ (সঃ) কে বলতে শুনেছি,”যে ব্যাক্তি প্রতিদিন সকালে সাতটি করে আজওয়া খেজুর খায়,সেদিন তাকে কোন বিষ বা যাদু ক্ষতি করতে পারেনা (মুসলিম)।
হযরত আবু হুরাইরা (রঃ) হতে বর্ণিত রাসূল (সঃ) বলেছেন,সাতটি ধ্বংসকারী জিনিস থেকে দূরে থাকো আল্লাহর সাথে কোন কিছু শরীক করা;যাদু বিদ্যা শেখা ও তা চর্চা করা;যে জীবনকে হত্যা করা আল্লাহ নিষিদ্ধ করেছেন,তাকে অবৈধ ভাবে হত্যা করা;সুদি লেনদেন করা;এতিমের ধন আত্মসাৎ করা;যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যাওয়া;পবিত্র চরিত্রের অধিকারী মুমিন নারীর ওপর অপবাদ দেওয়া (বুখারী,মুসলিম) । ইমরান বিন হুসাইন (রঃ) হতে বর্ণিত,রাসূল (সঃ) বলেছেন, যে কুলক্ষণ নির্ণয় করে,আর যার জন্য নির্ণয় করা হয়।যে যাদু করে,আর যার জন্য যাদু করা হয়।এবং যে গণকের নিকট এলো এবং তার কথা বিশ্বাস করলো,এরা আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।”(মুসনাদে বাযযার,সনদ হাসান)। ইসলামে যাদু করা যেমন নিষিদ্ধ করা হয়েছে তেমনি যাদুকরের কাছে যাওয়াকেও নিষিদ্ধ করেছেন।অনেকেই আমরা ভবিষ্যৎ জানার ব্যাপারে আগ্রহী থাকি।ভবিষ্যৎ জানতে গণকের কাছে যাই যা হারাম।মুসলিম হিসেবে আমাদের এই বিষয় গুলোর ব্যাপারে সচেতন থাকা উচিত।