ঘরকে দূষণমুক্ত রাখতে এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য যে ১০ টি গাছ ঘরে রাখতে পারেন।গাছ আমাদের প্রকৃত বন্ধু এ কথা আমরা সবাই জানি।গাছ পরিবেশ সুরক্ষিত রাখে,অক্সিজেন প্রদান করে আমাদের বাঁচিয়ে রাখে।কিছু কিছু ইনডোর প্লান্ট আছে যেগুলো ঘরের সৌন্দর্য বাড়ায়,ঘরে মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি করার পাশাপাশি ঘরকে দূষণমুক্ত রাখে।আজকে এমন ১০ টি গাছ সম্পর্কে জেনে নেই যা আমাদের ঘরের সৌন্দর্য একদিকে বৃদ্ধি করে অপরদিকে ঘরকে দূষণমুক্ত রাখে।
ঘৃতকুমারীর গুণের কথা কম বেশি আমরা সবাই জানি।এর অনেক উপকারী দিক রয়েছে।একদিকে এটি ভেষজ উদ্ভিদ হিসেবে ব্যাবহার করা হয় অন্যদিকে রূপচর্চায়ও এর বহুল ব্যাবহার রয়েছে।এর আরও একটি গুণ আছে এটি ঘরের দূষণ দূর করে।আপনি যদি আপনার ঘরে জানালার পাশে বা আলো পড়ে এমন স্থানে ঘৃতকুমারী গাছ রেখে দিন তাহলে ঘর পরিষ্কারক বা রঙের সাথে আমাদের ঘরে যে ফরমালডিহাইড ও বেনজিন প্রবেশ করে তা পরিষ্কার করবে।শুধু তাই নয় কাটাছেঁড়া স্থানেও অ্যালোভেরা জেল লাগালে উপকার পাওয়া যায়।কি অপরূপই না লাগবে দেখতে যদি আপনার ঘরে নানা রংয়ের জারবেরা ডেইজি গাছ থাকে।এটি একদিকে আপনার উচ্চ রুচিশীলতার পরিচয় দিবে অন্য দিকে আপনার ঘরের ট্রাইক্লোরোইথেন শুষে নেবে।সরাসরি ৬ ঘন্টা জারবেরা ডেইজি গাছ সূর্যের আলোয় রাখলে এবং ঠিক মতো যত্ন করলে একটি জারবেরা ফুল ২ সপ্তাহ পর্যন্ত গাছে স্থায়ী হবে।
স্নেক প্ল্যান্ট এর আরেক নাম শাশুড়ির জিহ্বা,কি অদ্ভুত নাম।এই নামকরণের পেছনের কারণ হচ্ছে এই গাছের পাতাটি খুব ধারালো।এই গাছটি অন্ধকার এবং জলীয়বাষ্পপূর্ণ স্থানে খুব সুন্দর করে বেড়ে উঠে।স্নেক প্ল্যান্ট ফরমালডিহাইড এবং কার্বনডাই-অক্সাইড দূর করে।আমরা সবাই জানি গাছ সাধারণত রাতে কার্বনডাই-অক্সাইড ত্যাগ কিরে কিন্তু এই গাছটি রাতে অক্সিজেন ত্যাগ করে।তাই এই গাছটি ঘরে থাকা মানে নিশ্চিন্ত মনে একটি ভালো ঘুম।
কর্মব্যস্ত এই আমরা শখ থাকলেও সময়ের অভাবে এবং ঠিকমতো পরিচর্যা না করতে পারার কারণে গাছ লাগানো থেকে দূরে থাকি।স্পাইডার প্ল্যান্ট আমাদের জন্য আশীর্বাদ আশীর্বাদ এই কারণে এই গাছটি আমাদের থেকে নেয় কম কিন্তু দেয় অনেক বেশি।এর আলাদা কোন যত্ন নিতে হয়না। এই গাছটি সাধারণত শুকনো মাটিতেই হয়।স্পাইডার প্ল্যান্ট ঘরের ফরমালডিহাইড,জাইলিন,কার্বন মনোক্সাইড ও বেনজিন দূর করে।এখন হয়তো প্রশ্ন আসতে পারে ঘরে এতো ক্ষতিকর রাসায়নিক আসবে কিভাবে।আমাদের অজান্তে চামড়ার ব্যাগ,ছাপার কালি,রাবারের পণ্যের সাথে সাথে আমাদের ঘরে জায়গা করে নেয় এই ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ।
শোবার ঘরে খিব সহজে মানি প্ল্যান্ট ঝুলিয়ে রাখা যায়।এটি ঘরের সৌন্দর্য অনেক গুণ বাড়িয়ে দেয় এবং ঘরকে দূষণমুক্তি থেকে রক্ষা করে।এটি আপনি মাটিতেও লাগাতে পারবেন আবার পানিতেও রাখতে পারবেন।অন্ধকারেও রাখতে পারবেন আবার আলোতেও।আঠা,রঙ,ডিটারজেন্ট ও প্লাস্টিকের সাথে আসা ক্ষতিকর বেনজিন দূর করে চন্দ্রমল্লিকা।হরেক রংয়ের ফুলের এই গাছটি দেখতে চমৎকার।ঘরের আলোকিত স্থানে গাছটি রাখতে পারেন।ঘরের ভেতর রাখার জন্য আলাদা জাতের চন্দ্রমল্লিকা আপনি খুব সহজেই পেয়ে যাবেন।
উইপিং ফিগ আপনার ঘরে থাকা মানে ঘরের আসবাবপত্রে ও কার্পেটে থাকা ট্রাইক্লোরোইথেন,বেনজিন এবং ফরমালডিহাইড থেকে মুক্তি পাওয়া।ধরুন যদি আপনার ঘরে একটি চমৎকার লাল ধারের একটি ড্রাসিনিয়া থাকে তাহলে কতই না ভালো হয়।লাল ধারের এই ড্রাসিনিয়া বার্নিশ এবং গ্যাসোলিনের সাথে আসা ক্ষতিকর জাইলিন,ট্রাইক্লোরোইথেন দূর করে।
এই নামটি যেমন চমৎকার দেখতেও গাছটি চমৎকার। ইংলিশ আইভি ছোট পাত্রে খুব সহজেই আপনার ঘরে রেখে দিতে পারেন।শুধু মাঝে মাঝে ছেটে দেওয়ার মাধ্যমে একে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারলেই হয়।এটি আপনাকে বিশুদ্ধ বাতাস দেবে।এই ইনডোর প্ল্যান্টটি বাতাসকে বিশুদ্ধ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।আর গাছটির যত্ন করা মোটেও ঝামেলার কিছুনা অল্প আলোতে রেখে মাঝে মাঝে পানি দিলেই গাছটি খুব সুন্দর ভাবে বেড়ে উঠে।গাছ দিয়ে যদি খুব সুন্দর করে আপনার ঘরটিকে সাজিয়ে তোলেন হলে একদিকে আপনি সুস্থ থাকবেন অন্যদিকে আপনার রুচি ফুটে উঠবে।