মহা”মারী প্লেগ এর ইতিহাস, যা জানলে শি’উরে উঠবেন আপনি।করোনা ভাইরাসই যে মানবজাতির কাছে প্রথম মহা”মারী না একথা সবাই জানে।এর আগেও অনেক বড় বড় মহা”মারী আঘাত হেনেছিলো পৃথিবীর বুকে।যেমন অ্যান্টোনাইন প্লেগ,জাস্টিনিয়ান প্লেগ,দ্য ব্ল্যাক ডেথ,স্মলপক্স,কলেরা,রাশিয়ান ফ্লু ইত্যাদি।তবে প্লেগ রোগের আলাদা একটা ইতিহাস আছে যা জানলে আপনি অবাক হবেন।এই এক প্লেগ রোগের কারণে পুরো এশিয়ার জীবন বদলে দিয়েছিলো।ইউরোপের মোট জনসংখ্যার তিন ভাগের এক ভাগ মারা গিয়েছিলেন পনেরো শতকে এই প্লেগ রোগের কারণে। আজকের করোনা ভাইরাসের যেখান থেকে উৎপত্তি সেই চীন থেকেই উৎপত্তি হয়েছিলো প্লেগ রোগেরো।ইয়ারসিনিয়া পেস্টিস নামক একধরনের ব্যাকটেরিয়া থেকে মূলত প্লেগ রোগের সৃষ্টি।এই জীবা”ণুর সংস্পর্শে আসার ১-৭ দিনের মধ্যেই শরীরে ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো উপসর্গ দেখা দেয়।প্লেগ রোগকে বায়োলজিক্যাল যুদ্ধের প্রাথমিক উদাহরণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
চতুর্দশ শতাব্দীতে প্লেগ রোগকে বায়োলজিক্যাল অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়।প্লেগ মহামারি ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সৈন্যরা প্লেগ রোগে আক্রান্ত মৃতদেহগুলোকে গ্রামে গ্রামে নিক্ষেপ করা হতো।চীন ও জাপানের দ্বিতীয় যুদ্ধে প্লেগ রোগকে ব্যাবহার করা হয় ব্যাকটেরিয়া জনিত অস্ত্র হিসেবে।এই প্লেগ রোগ সরবার করেছিলো জাপান।জাপানি আর্মির মেডিকেল অফিসার ও মাইক্রোবায়োলজিষ্ট শিরো ইশি।শিরো ইশির নেতৃত্বে পরিচালিত ইউনিট ৭৩১ যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যাবহারের জন্য মানবশরীরে প্লেগ রোগের পরীক্ষা চালান।
১৯৪১ সালে জাপান চীনে এই প্লেগ রোগ ছড়িয়ে দিয়েছিলো।১৯৪১ সালে জাপানের রাজকীয় বিমান বাহিনী চীনের নিংবো শহরে বিউনিক প্লেগ জীবাণু বহনকারী মক্ষিকার বোমা ছুড়ে মেরেছিলো।যার ফলে চীনে প্লেগ রোগ মহা”মারী আকার ধারণ করেছিলো।আর এই মক্ষিকার বোমা ছোড়ার বিষয়টি পরবর্তীতে প্রমাণিতও হয়েছিলো।খাবারোভস্ক যুদ্ধাপরাধের বিচার এর সময় অভিযুক্ত মেজর জেনারেল কিয়াশি কাওয়াশিমাকে আটক করা হয়েছিলো।পরবর্তীতে তিনি মক্ষিকা নিক্ষেপ এর অভিযোগ স্বীকার করে নেন।তিনি স্বাক্ষ্য দেন ১৯৪১ সালে।ইউনিট ৭৩১ এর ৪০ জন সদস্য চ্যাংদ এলাকায় প্লেগবাহী মক্ষিকা নিক্ষেপ করেছিলো।
প্লেগ রোগ একবার না দুইবার না তিন বার মহা”মারীর সৃষ্টি করেছিলো।প্রথম বার প্লেগ রোগ মহামারী আকারে ছড়িয়েছিলো ষষ্ঠ শতাব্দীতে।ওই মহা”মারীতে প্রায় আড়াই কোটি লোক মা”রা গিয়েছিলো।রোমান সম্রাট প্রথম জাস্টিনিয়ান এর নামানুসারে তখন প্লেগ রোগের নামকরণ করা হয়েছিলো জাস্টিনিয়ান প্লেগ। পরবর্তীতে প্লেগ আবার হানা দিয়েছিলো মধ্যযুগের শেষদিকে।১৩৪৭ সালে প্লেগ রোগের প্রভাবে ইউরোপের এক তৃতীয়াংশ লোকের প্রা’ণহা’নি ঘটেছিলো।তৃতীয় বার প্লেগ রোগ আঘাত হানে উনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে ১৮৯৪ সালের জানুয়ারি মাস থেকে জুন মাস পর্যন্ত এর প্রাদুর্ভাবে প্রায় আশি হাজার লোক মারা যায়।প্লেগ রোগের কারণে অনেক লোকের প্রা’ণহা’নি ঘটে।