ফোন আসক্তি আপনার শিশুকে অটিস্টিক করে তুলতে পারে । ডিজিটাল বিপ্লবের এই যুগে এমন কোন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ পাওয়া যাবে না,যে ফোন ব্যবহার করে না।কিন্তু এই ফোন যখন শিশুরা ব্যবহার করেন তখন সেটা অশুভ ভবিষ্যতেরই ইঙ্গিত দেয়।
আমাদের এই ব্যস্ততম জীবনে বাবা, মা দুইজনই ঘরের বাইরে কাজ করে। বর্তমানে ছোট পরিবারের বেশি প্রচলন বলে ছোট বাচ্চাটি ঘরে একা বা গৃহকর্মীর কাছে রেখে বাবা-মা বাইরে কাজে জান। এই সময়ে বাচ্চাটির একমাত্র সঙ্গী হয় মোবাইল ফোন,ট্যাব,ল্যাপটপ ইত্যাদি।ইন্টারনেটের সহজলভ্যয় তারা যা কিছু দেখতে চায় সহজেই তা খুজে পায়। যা এক সময় বাচ্চার মানসিক বিকাশে মারাত্মক ভাবে প্রভাব ফেলে।
বর্তমানে বাচ্চাদের খাবার খাওয়ানোর অন্যতম মাধ্যম হিসেবে বাবা-মা মোবাইল ফোনকে বেছে নিয়েছে।যা ভয়ানক প্রভাব শিশুর উপর পরে। আবার অনেক ক্ষেত্রে বাচ্চা বিরক্ত করলে তার হাতে তুলে দেওয়া হয় মোবাইল ফোনের মত মারাত্মক হাতিয়ার।
আর এটি হাতে পেলেই বাচ্চারা ডুবে থাকে ভয়াবহ ভবিষ্যতের দিকে। আবার শহরে বসবাস রত বাচ্চারা বাইরে খোলা মাঠ পায় না, অথবা বাইরে অনিরাপদ বলে শিশুটিকে বাবা -মা চারদেয়ালের মাঝে হাতে মোবাইল ফোন দিয়ে আটকে রাখেন।
যদি শিশুদের জন্য মোবাইল ফোন কতটা মারাত্মক ক্ষতি সেটা বুঝতো!আবার অনেক সময়ে ভয়াবহতা বুঝেও করার কিছু থাকে না!ইউনিসেফ গবেষণায় বলছে,বাংলাদেশী শিশুদের অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছে, শিশুরা অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহার এর ফলে মানসিক বিকাশে মারাত্মক ভাবে প্রভাব ফেলে।শিশুরা চোখের নানা রোগে আক্রান্ত হয় মোবাইল ফোনের বিকিরণের জন্য।শিশুর মানসিক বেড়ে ওঠাকে বাধাগ্রস্ত করে।বাচ্চার ধৈর্য ও মনোযোগ কমিয়ে দেয়।এর ফলে শিশু ধীরে ধীরে অসামাজিক,অসহিষ্ণু, উচ্ছৃঙ্খল ও উদ্ধতস্বভাবের হয়ে পরে।’মনোযোগের ঘাটতি জনিত চঞ্চলতা বা অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার অ্যাক্টিভিটি ডিসর্ডার নামক জটিলতায় ভোগে।
স্মার্টফোন এর মাধ্যমে শিশুরা অপ্রাপ্ত বয়সেই না বুঝে বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক ও আপত্তিকর কাজে লিপ্ত হয়ে পরে। কম বয়েসে খারাপ কাজের সম্মুখীন হয়ে পড়লে পরে তারা তা স্বাভাবিক ব্যাপার বলে মনে করে।ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিশুরোগ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা.সাঈদা অানোয়ার পপি বলেছেন,”মোবাইলের প্রতি আসক্তি শিশুর সামাজিক দক্ষতা নষ্ট করে দিচ্ছে।ফলে তৈরি হয় শিশুদের শারিরীক ও মানসিক সমস্যা। দীর্ঘ সময় ফোনের সামনে বসে থাকলে শিশুর স্থূলতাও বেড়ে যায় কমে যায় শিশুর কল্পনাশক্তি। We are social and hut suit নামক গবেষণা প্রতিষ্ঠান বলছে, “ভারতও তার আশে পাশের দেশ গুলোতে শিশুদের মোবাইল ফোন ব্যবহার এর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।যেখানে চীনের মতো প্রযুক্তিবান্ধব দেশে শিশুরা গড়ে দিনে ২ ঘন্টা ফোন ব্যবহার করেছে অন্য দিকে ভারতসহ আশে পাশের দেশ গুলোর শিশুরা গড়ে দিনে পাচঁ -ছয় ঘন্টার বেশি ফোন ব্যবহার করে।।এক গবেষণায় বলা হয়েছে, “শিশুদের ১৪ বছরের আগে হাতে স্মার্টফোন দেওয়া উচিত না।”শিশুরা একঘেয়েমি ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকার ফলে দেড়ি করে কথা বলছে,কথা বলা শিখছে না।আবার অনেক সময় অটিস্টিক হয়ে যাচ্ছে।তাই এই ভয়াবহ ভবিষ্যত থেকে পরিবার, সমাজ, দেশকে বাচাঁতে হলে আপনার শিশুকে পর্যাপ্ত পরিমান সময় দিন এবং ফোন আসক্তি কমাতে যাথাযথ ব্যবস্থা নিন ।