টেকনোলজি তে এ এগিয়ে আছে যেসব দেশ আমরা হয়তো জানিনা দেশ । বর্তমান বিশ্বে আমাদের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলো টেকনোলজি। প্রযুক্তি ছাড়া আমাদের জীবনের একটি দিন অতিবাহিত করাও মুশকিল। এই টেকনোলজির পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত একে অন্যকে পাল্লা দিয়ে উঠছে একেকটি দেশ। এই প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বের প্রতিযোগিতার খাতায় বাদ যায়নি টেকনোলজি বা প্রযুক্তিও।এই কম্পিটিশন একের পর এক এগিয়ে আসছে বিভিন্ন দেশের শহরগুলো। চলুন জেনে নেয়া যাক এমনি কিছু হাই টেকনোলজি এর শহরগুলো সম্পর্কে –
১. নিউইয়র্ক : টেকনোলজি বিশ্বের সেরা শহরগুলোর তালিকায় রয়েছে নিউইয়র্কের নাম। এই নিউইয়র্ক শহরের বিশেষত্ব হলো, এখানকার ২৫ % উদ্যোক্তা নারী । এই শহরটিতে আছে উচ্চগতির ওয়াইফাই এবং ডাউনলোড স্পিড। যুক্তরাষ্ট্রের আইটি খাত থেকে যে পরিমাণ অর্থ আয় হয়, তার একটি বড় পরিমাণ আসে এই নিউইয়র্ক শহর থেকে।২.সিলিকন ভ্যালি : গোটা বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় স্থান হলো সিলিকন ভ্যালি। যা যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সানফ্রান্সিসকো নামক স্থানে অবস্থিত । সমুদ্র ও পাহাড়ে ঘেরা এই শহরটি বিবেচিত হয়ে আসছে বিশ্বের সেরা টেকনলোজি শহর হিসেবে। যু্ক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালিতে রয়েছে সহস্রাধিক স্মার্টআপ প্রতিষ্ঠান। এই শহরে রয়েছে ফেইসবুক, গুগল,আ্যপল, সিসকো সিস্টেমস, অ্যাডোবি , ইন্টেল, ইবে, এইচপিসহ নামকরা সকল প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয়। প্রযুক্তিতে পেশাজীবীদের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় এই শহরটি। এই শহরের একজন কর্মীর গড় বার্ষিক বেতন হচ্ছে প্রায় দেড় লক্ষ মার্কিন ডলার।
৩.টোকিও : প্রযুক্তি বিশ্বে জাপানের রাজধানীর অবস্থান অন্যতম। টেক গ্যাজেট, পরবর্তী প্রজন্মের মোবাইল ফোন, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির পণ্য এবং দ্রুতগতির যানবাহন তৈরিতে এই শহরটির জুড়ি মেলা কষ্টসাধ্য। প্যানাসনিক,সনি, নিক্কনসহ অসংখ্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের হোম টাউন হচ্ছে এই টোকিও শহর ।৪.টরেন্টো : কানাডার রাজধানী হলো এই টরেন্টো শহর। কানাডার টেকনোলজি ব্যবসার ৪০ % সংঘটিত হয় এই শহরটিতে। এর পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন শীর্ষ প্রতিষ্ঠানেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে টরেন্টো। ফেইসবুক, টুইটার, গুগল,লিংডইন সহ বেশকিছু নাম খ্যত প্রতিষ্ঠান এর অফিস এই শহরটিতে রয়েছে৫.বেঙ্গালুরু: প্রতিবেশী দেশ ভারতের সিলিকন ভ্যালি হিসেবে সারা বিশ্বে পরিচিত এই বেঙ্গালুরু শহর।এই শহর দিন দিন প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এটি ভারতের সবচেয়ে বৃহৎ প্রযুক্তি শহর। ভারতের আইটি রপ্তানির মোট ৩৩ % তৈরি হয় বেঙ্গালুরু থেকে। বেঙ্গালুরুর ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিতে আকৃষ্ট হয়ে এইখানে অফিস খুলেছে মাইক্রোসফট, গুগলসহ বেশকিছু নামীদামী প্রতিষ্ঠান।
৬.সিঙ্গাপুর সিটি: এশিয়ার মধ্যে প্রযুক্তিতে শীর্ষ শহরের তালিকায় একধাপ এগিয়ে রয়েছে সিঙ্গাপুরের সিঙ্গাপুর সিটি। কেবলমাত্র ৪০ বর্গ কিলোমিটারের ক্ষুদ্র এই দেশের প্রতিটি বাড়িতে রয়েছে সর্বাধুনিক তথ্য প্রযুক্তির প্রয়োগ। এই শহরের অধিকাংশ দোকান এবং শপিং সেন্টারগুলো ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত । গবেষণায় জানা যায় যে, বেশিরভাগ প্রোগ্রামার এবং উদ্যোগী পুঁজিপতির বাড়ি রয়েছে এই ছোট্ট শহরে। এ ছাড়াও ভবিষ্যতের সবচেয়ে উচ্চ প্রযুক্তির শহর হতে চলেছে এই সিঙ্গাপুর সিটি। এম আই টি এর সাথে অংশীদারিত্বে দেশটিতে স্মার্ট সুবিধা চালু হতে যাচ্ছে।৭.সিউল: গোটা পৃথিবীর প্রযুক্তির রাজধানী হিসেবে খ্যাত দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউল শহর। হাই টেকনলোজিতে বিশ্বের অন্যতম সেরা শহর হলো এটি। সিউল এমন একটি শহর, যেখানে অধিকাংশ মানুষ কাজ করে হাই টেক কোম্পানিগুলোতে। শহরটির পার্ক, রাস্তা,অলিগলি সহ ১০ হাজার ৪৩০ টি জায়গায় রয়েছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ওয়াইফাই ব্যবস্থা।দক্ষিণ কোরিয়ার মূল আয়ের সিংহভাগ আসে এই শহর থেকেই। এখানে স্যামসাং, এলজি,হুন্দাই,কিয়া সহ ১০০-এর অধিক বিশ্বমানের কোম্পানিগুলোর প্রধান কার্যালয়। বর্তমানের বিশ্বে প্রযুক্তিতে একের পর এর আবিষ্কারের মাধ্যমে এক দেশ আরেক দেশকে তাক লাগিয়ে দিয়ে চলছে। সবসময় এই প্রযুক্তিতে কম্পিটিশন চলতে থাকে। উপরোক্ত শহরগুলো ছাড়াও এমন অনেক হাই টেকনোলজির শহর রয়েছে। আর এই প্রযুক্তির কল্যাণের আমাদের জীবন যাপন হয়ে উঠেছে এতো আরামদায়ক।